তাফসীরে মাসুমীতে আহলে বাইত সম্পর্কিত তথ্য

তাফসীরে মাছুমী
হযরতুল আল্লামা শাহ সূফী দরবেশ আলী আকবর চিশতী সাবেরী নকশেবন্দী মুজাদ্দেদী আল কাদরী আঁকা ফয়েজে আল মাছুমী রহ.
পৃঃ 13
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই এলমে লাদুন্নী বা গুপ্ত এলেম তার কতিপয় সাহাবীদেরকেও দান করেছেন। যেমন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী (রা.) কে এই জ্ঞান দান করেছেন। হযরত আলী (রা) সম্পর্কে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন...
”আমি প্রজ্ঞার (যাবতীয় এলেম) শহর এবং আলী হলো তহার দরজা। (তিরমিজী কিতাবুল মানাকিব)।”
ইন্তেকালের পূর্বে গুপ্ত জগতের গুরুভার হযরত আলী (রা.) এর উপর অর্পন করে যান। গাদীরে খুমে হুজুর সাঃ আলী রা. কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেটিই বেলায়েতের খেলাফত। এখানেই শীয়া সুন্নী দ্বন্দ লেগে যায়। শিয়ারা বলে হযরত আলী (রা) কে দেশের খলীফা নির্বাচন করে গেছেন। কিন্তু আলীতো এলমে লাদুন্নীর দরজা। আলী রা. বিনে মারেফত হাসিল হবেনা। হযরত আলী রা. দেশের খলিফা হবেনই কিন্তু গাদিরে খুমের খেলাফত বেলায়াত রাজ্যের খেলাফত।কিন্তু শিয়ারা তা মানেনা, বিধায় শিয়াদের মধ্যে আধ্যাতিকতা বলতে কিছুই নেই। তাদের মধ্যে তরিকার কোন প্রচলন নেই। তারা অন্যান্য সাহাবাদের দোষ চর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। (তবে, যাই হোক বইয়ের লেখক গাদীরে খুমে আলী রা. এর বেলায়াতের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন যদিও এটা কেবল মাত্র আধ্নাত্নিক না কি আধ্নাত্নিক ও রাজনৈতিক উভয়টি তা গবেষণার দাবী রাখে।)

উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন যে, একদিন জিব্রাঈল আমীন আমার খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ!
”ক্বালাবতু মাশারিকাল আরদি ওয়া মাগারিবাহা, ফালাম আজিদ রাজুলান আফদালু মিন মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওয়ালাম আরা বাইতান আফদালু মিন বাইতি বানি হাশিম”
অর্থাৎঃ আমি পূর্ব পশ্চিম সমগ্র পৃথিবী পরিভ্রমন করেছি, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোন উত্তম পুরুষ এবং বনু হাশিম (নবীজির বংশধর) থেকে উৎকৃষ্ট বংশ আমি দেখিনি।
সূত্রঃ তাবরানীঃ আল মু’জামূল আওসাত, 14/45)

লেখক অত্র বইয়ের 38 পৃষ্ঠায় আলিফ লাশ মীমের সপ্তম ব্যখ্যায় লিখেনঃ
আলিফ ৈএবং লাম একত্রে আল বা বংশধর এবং মীম দ্বারা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বোঝায়। অর্থাৎ আলে আলিফ লাম মিম এর আরেকটা অর্থ আলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা আহলে বাইত।কেননা আহলে বাইত হলো কুরআনকে বোঝার মাধ্যম। কুরআনকে বুঝতে হলে আহলে বাইতের আশ্রয়ে আসতে হবে। কুরআন আর আহলে বাইত অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। তাই হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আমি তাঁর বিদায় হজ্জে আরাফার দিন তার কাসওয়া নামক উস্ট্রীতে আরোহিত অবস্থায় বক্তৃতা দিতে দেখেছি এবং তাঁকে বলতে শুনেছিঃ হে লোক সকল! নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আমি এমন জিনিস রেখে গেলাম, তোমরা তা ধারন বা অনুসরন করলে কখনও পথভ্রষ্ট হবেনা। আল্লাহ তায়ালার কিতাব (আল-কুরআন) এবং আমার ইতরাত অর্থাৎ আমার আহলে বাইত। (তিরমিজি শরীফ, কিতাবুল মানাকিব, বাবঃ মানাকিবে আহলে বাইত)

বইটির সম্পাদনা করেছেন আল্লামা সাজ্জাদ হোসেন রনি চিশতী সাবেরী। প্রষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন আল্লামা শাইখ মুফতি মোখতার রেজা মাছুমী ফয়েজে আল উসমানী, প্রকাশনায় ”অগ্রগামী প্রকাশনী” এবং পরিবেশনায় “রশীদ বুক হাউস”।

Comments

Popular posts from this blog

আহলে বাইত পরিচিতি:। প্রিয় নবী সা. এর আদরের কন্যা হযরত ফাতিমা সা.আ. (শেষ পর্ব)

হযরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ফজিলত ও মর্যাদা

মহানবী সা. ই হচ্ছেন একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ ও মানদন্ড।