আহলে বাইত পরিচিতি:। প্রিয় নবী সা. এর আদরের কন্যা হযরত ফাতিমা সা.আ. (শেষ পর্ব)

                                              হযরত ফাতিমার জীবনযাপন প্রণালী
                                                যুহ্দ বা দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ততা


ইমাম জা’ফর আস সাদেক (আ.) এবং হযরত জাবের আনসারী থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,একদিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) হযরত ফাতেমাকে দেখলেন যে,তিনি একটি মোটা ও শক্ত কাপড় পরিধান করে নিজ হস্তে যাঁতাকল চালিয়ে আটা তৈরী করছেন। আর সে অবস্থায় নিজের কোলের সন্তানকে দুধ খাওয়াচ্ছেন। এহেন অবস্থা পরিদর্শনে হযরতের চোখে পানি ছল ছল করে উঠলো। তখন তিনি বলেন : “আমার হে প্রিয় কন্যা! এ দুনিয়ার তিক্ততা আখেরাতের মিষ্টি স্বাদেরই পূর্ব প্রস্তুতি মনে করে সহ্য করে যাও।” প্রত্যুত্তরে হযরত ফাতেমা বলেন :
হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আল্লাহ্ প্রদত্ত এতসব নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই এবং এ জন্যে তাঁর অশেষ প্রশংসাও করছি। তখন আল্লাহ্ নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ করেন :
)وَ لَسَوْفَ يُعْطِيْكَ رَبُّكَ فَتَرْضَى(
অর্থাৎ তোমার প্রভু অতি শীঘ্রই তোমাকে এতসব কিছু দেবেন যার ফলে তুমি সন্তুষ্ট হবে।”২২
গৃহাভ্যন্তরে কাজ
ইমাম জা’ফর সাদিক (আ.) বলেন : “ইমাম আলী (আ.) পানি ও কাঠ জোগাড় করে আনতেন আর হযরত ফাতেমা (আ.) আটা তৈরী করে খামির বানাতেন আর তা দিয়ে রুটি তৈরী করতেন। তিনি কাপড়ে তালি লাগানোর কাজও করতেন। এ মহিয়সী রমণী সকলের চেয়ে বেশী রূপসী ছিলেন এবং তাঁর পবিত্র গাল দু’টি সৌন্দর্যে পুষ্পের ন্যায় ফুটে ছিল। আল্লাহর দরূদ তিনি সহ তাঁর পিতা,স্বামী ও সন্তানদের উপর বর্ষিত হোক।”২৩
হযরত আলী (আ.) বলেছেন : “ফাতেমা মশক দিয়ে এতই পানি উত্তোলন করেছেন যার ফলে তাঁর বক্ষে ক্ষতের ছাপ পড়ে যায়,তিনি হস্তচালিত যাতাকলের মাধ্যমে এত পরিমান আটা তৈরী করেছেন যার কারণে তাঁর হাত ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়,তিনি এত পরিমান ঘর রান্না-বান্নার কাজ করেছেন যে তাঁর পোশাক ধুলি  ধোঁয়া মাখা হয়ে যেত। এ ব্যাপারে তিনি প্রচুর কষ্ট স্বীকার করেছেন।”২৪ (উল্লেখ্য যে তিনি মদীনার দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতিদিনই রুটি প্রস্তুত করতেন।)
দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক সমঝোতা
আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) বলেন : “আল্লাহর শপথ,আমার দাম্পত্য জীবনে ফাতেমাকে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কখনো রাগাইনি আর কোন কাজে তাকে বাধ্য করি নি। সেও আমাকে কখনো রাগান্বিত করে নি এবং কখনো আমার অবাধ্য হয় নি। যখনি তাঁর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতাম তখনি আমার দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যেত।”২৫
ইবাদত ও অপরের জন্যে দোয়া
হযরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন : “নবী (সা.)-এর উম্মতের মধ্যে হযরত ফাতেমার ন্যায় ইবাদতকারী পৃথিবীতে আর আসেনি। তিনি নামাজ ও ইবাদতে এতবেশী দণ্ডায়মান থাকতেন যে,ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে গিয়েছিল।”২৬
ইমাম হাসান (আ.) বলেন : “এক বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত্রে আমার মাকে ইবাদতে দণ্ডায়মান দেখতে পেলাম। তিনি সুবহে সাদেক পর্যন্ত নামাজ ও মুনাজাতরত ছিলেন। আমি শুনতে পেলাম যে,তিনি মু’মিন ভাই-বোনদের জন্যে তাদের নাম ধরে দোয়া করলেন কিন্তু নিজের জন্যে কোন দোয়াই করলেন না। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম,মা! আপনি যেভাবে অন্যের জন্যে দোয়া করলেন সেভাবে কেন নিজের জন্যে দোয়া করলেন না? উত্তরে তিনি বলেন : হে বৎস! প্রথমে প্রতিবেশীদের জন্যে তারপর নিজেদের জন্যে।”২৭
পর্দা
ইমাম মুসা কাযেম (আ.) তাঁর পিতা ও পিতামহদের কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন যে হযরত আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) বলেছেন : “একদিন এক অন্ধ ব্যক্তি ফাতেমার গৃহে প্রবেশের জন্যে অনুমতি চাইলে তিনি ঐ অন্ধ ব্যক্তি থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখলেন । রাসূল (সা.) বললেন : হে ফাতেমা! কেন তুমি এই ব্যক্তি থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখছো,সে তো অন্ধ,তোমাকে দেখছে না।? প্রতি উত্তরে ফাতেমা বলেন : যদিও ঐ অন্ধ লোকটি আমাকে দেখছেন না কিন্তু আমি তো তাকে দেখছি। এ অন্ধ ব্যক্তিটির নাসিকা গ্রন্থি তো কাজ করছে। তিনি তো ঘ্রান নিতে পারেন। এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বলেন : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,তুমি আমার দেহের অংশ।”২৮
সতীত্ব এবং বেগানা পুরুষ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা
হযরত ফাতেমা (আ.)-কে প্রশ্ন করা হয়,“একজন নারীর জন্য সর্বোত্তম জিনিস কোনটি?” তিনি এর উত্তরে বলেন : “নারীদের জন্যে সর্বোত্তম জিনিস হলো তারা যেন কোন পুরুষকে না দেখে আর পুরুষরাও যেন তাদেরকে দেখতে না পায়।”২৯
তদ্রুপ মহানবী (সা.) যখন তাঁর সাহাবীদের সামনে প্রশ্ন রাখেন যে,“একজন নারী কখন মহান আল্লাহর সবচেয়ে নৈকট্য লাভে সক্ষম হন?” তখন হযরত ফাতেমা বলেন : নারী যখন বাড়ীর সর্বাপেক্ষা গোপন অংশে অবস্থান গ্রহণ করে তখন তার প্রভুর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) হযরত ফাতেমার উত্তর শ্রবন করে বলেন : “ফাতেমা আমার শরীরের অংশ।”৩০
হ্যাঁ,এটা সুস্পষ্ট যে যতক্ষণ পর্যন্ত একজন নারীর গৃহের বাইরে আসার কারণে কোন হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ সংঘটিত না হয় ততক্ষণ তার বহিরাগমনে কোন আপত্তি নেই। কখনো কোন কাজের জন্যে নারীর বহিরাগমনের দিকটা কল্যাণকর হয়ে থাকে আবার কখনো অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। উপরোল্লিখিত রেওয়ায়েতগুলোর অর্থ হচ্ছে কোন প্রয়োজনীয় কাজ ব্যতীত একজন নারীর গৃহের বাইরে পর-পুরুষের দৃষ্টির সামনে নিজেকে উপস্থাপন করা অনুচিত।
গৃহভৃত্যের সাথে কাজের ভাগাভাগি
হযরত সালমান ফারসী বলেন : একবার হযরত ফাতেমা হস্তচালিত যাঁতাকল দিয়ে আটা তৈরী করছিলেন। আর যাঁতাকলের হাতল ফাতেমার হাতের ক্ষতস্থান দ্বারা রক্তরঞ্জিত হয়ে গিয়েছিল। তখন শিশু হুসাইন তাঁর পার্শ্বে ক্ষুধার জ্বালায় ক্রন্দন করছিল। আমি তাকে বললাম : “হে রাসূলের দুহিতা! আপনার হাত ক্ষত হয়ে গেছে,‘ফিদ্দা’ (হযরত ফাতেমার গৃহপরিচারিকার নাম) তো আপনার ঘরেই আছে।” তখন তিনি বলেন : “রাসূল (সা.) আমাকে আদেশ করেছেন যে পালাক্রমে একদিন ফিদ্দা ঘরের কাজ করবে আর আমি অন্য একদিন। তার পালা গতকাল শেষ হয়ে গেছে আর আজকে আমার পালা।”৩১
দুনিয়া ত্যাগ ও আল্লাহর ভয়
যখন,
)وَ إِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِيْنَ  لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِكُلِّ بَابٍ مِنْهُمْ جُزْءٌ مَقْسُوْمٌ(
অর্থাৎ এবং নিশ্চয়ই জাহান্নাম তাদের সকলের জন্যে প্রতিশ্রুত স্থান। তার সাতটি দ্বার আছে। যার প্রত্যেক দ্বারের জন্যে তাদের অন্তর্ভুক্ত স্বতন্ত্র দল থাকবে।৩২
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) উচ্চস্বরে ক্রন্দন করেছিলেন। আর তাঁর সাহাবীরাও তাঁর কান্না দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন। কিন্তু তারা জানতেন না যে হযরত জিবরাঈল (আ.) রাসূল (সা.) উপর কি অবতীর্ণ করেছেন। মহানবী (সা.) ভাবগম্ভীর অবস্থা দেখে তাকে কেউ কিছু প্রশ্ন করার সাহস পায় নি। হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখনি হযরত ফাতিমাকে দেখতেন তখনি আনন্দিত হয়ে উঠতেন। তাই হযরত সালমান ফারসী মহানবী (সা.)-এর এহেন অবস্থার সংবাদ হযরত ফাতেমাকে প্রদান করার জন্যে তাঁর গৃহাভিমুখে যাত্রা করেন। হযরত সালমান ফারসী তাঁর গৃহে পৌঁছে দেখেন যে হযরত ফাতেমা যাঁতায় আটা তৈরী করছেন,আর
)وَ مَا عِنْدَ اللهِ خَيْرٌ وَ أَبْقَى(
অর্থাৎ আল্লাহর নিকট যা আছে তা কল্যাণকর এবং তাই অবশিষ্ট থাকবে।৩৩
এ আয়াতটি পাঠ করছেন। তাঁর পরনে একটি পশমী আবা,যার বার জায়গায় খেজুরের আঁশ দ্বারা তালি লাগানো ছিল।
হযরত সালমান ফারসী হযরত ফাতেমার কাছে নবী (সা.)-এর অবস্থা এবং হযরত জিবরাঈল (আ.) যে কিছু নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন-তা খুলে বললেন। হযরত ফাতেমা উঠে দাঁড়ালেন এবং সেই তালি দেয়া আবা পড়েই বাবার কাছে রওয়ানা হলেন। হযরত সালমান ফারসী হযরত ফাতেমার পরনে এ ধরনের কাপড় দেখে ভীষণ কষ্ট পেলেন। তিনি বলেন : হায়! রোমান ও পারস্য সম্রাটদের কন্যারা রেশমী কাপড় পরিধান করে আর মুহাম্মদ (সা.) কন্যার পরনে পশমী আবা,যার বারো স্থানে তালি লাগানো আছে! হযরত ফাতেমা (আ.) বাবার কাছে পৌঁছে সালাম দিয়ে বললেন : “হে পিতা! সালমান আমার পোশাক দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। সেই আল্লাহর শপথ! যিনি আপনাকে নবুওয়াত প্রদান করেছেন,পাঁচ বৎসর যাবৎ এই একটি দুম্বার চর্ম ছাড়া আমাদের অন্য কিছু নেই-যার উপর দিনের বেলা উটের খাবার রাখি আর রাত্রিতে এটাই আমাদের বিছানা। আমাদের বালিশ একটি চামড়া দ্বারা তৈরী যার ভিতরে খেজুরের আঁশ দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন : হে সালমান! আমার মেয়ে আল্লাহর পথে অগ্রগামীদের অন্তর্ভূক্ত। হযরত ফাতেমা পিতাকে প্রশ্ন করেন : “বাবা আপনার জন্যে আমার জীবন উৎসর্গ হোক! বলুন,কি কারণে আপনি ক্রন্দন করেছিলেন?” তখন রাসূল (সা.) হযরত জিবরাঈল কর্তৃক অবতীর্ণ আয়াতটি পাঠ করেন। হযরত ফাতেমা আয়াতটি শ্রবণ করে এমনভাবে ক্রন্দন করেন যে মাটিতে পড়ে যান। তখন থেকে অনবরত তিনি বলতেন : হায়! হায়! যার জন্যে জাহান্নামের আগুন  নির্দ্ধারিত হবে তার অবস্থা কেমন হবে..।৩৪
দানশীলতা ও বদান্যতা
হযরত জাবির বিন আবদুল্লাহ্ আনসারী বলেন : “একদিন রাসূলে আকরাম (সা.) আসরের নামাজ আমাদের সাথে আদায় করেন। নামাজ শেষে তিনি কেবলামুখী হয়ে বসেছিলেন এবং লোকজন তাঁর চারপাশে জড় হয়েছিল। তখন একজন আরব বৃদ্ধ মুহাজির (যার পরনে অত্যন্ত পুরনো কাপড় ছিল) মহানবীর নিকট আসেন। সে লোকটি বার্ধক্যের কারণে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না। রাসূলে খোদা (সা.) লোকটির সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন। ঐ বৃদ্ধ লোকটি বলেন : “ইয়া রাসুলুল্লাহ্,আমি ক্ষুধার্ত,আমাকে অন্ন দান করুন। আমার পরনের কাপড় নেই,আমাকে পরিধেয় বস্ত্র দান করুন। আমি নিঃস্ব,দরিদ্র,আমাকে দয়া করে কিছু দিন।”
রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বললেন : “আমার দেয়ার মত কিছু নেই। তবে কোন ভাল কাজের দিক-নির্দেশনা দান তা সম্পাদন করার অনুরূপ। তুমি ফাতেমার বাড়িতে যাও। সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলও তাকে ভালবাসে। সে আল্লাহর পথে দান করে থাকে।”
হযরত ফাতেমার গৃহ রাসূল (সা.)-এর গৃহ সংলগ্ন ছিল এবং ঐ বাড়ীটি নবী (সা.)-এর স্ত্রীদের থেকে পৃথক ছিল।
রাসূল (সা.) হযরত বেলালকে ডেকে বললেন : হে বেলাল,তুমি এই বৃদ্ধ লোকটিকে ফাতেমার বাড়ীতে পৌঁছিয়ে দিয়ে আস। বৃদ্ধ লোকটি হযরত বেলালের সাথে হযরত ফাতেমার গৃহের দ্বারে পৌঁছেন। সেখান থেকেই বৃদ্ধ উচ্চৈঃস্বরে বললেন : আসসালামু আলাইকুম,হে নবুওয়াতের পরিবার,ফেরেশতাদের গমনাগমনের স্থল,আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নাযিলের জন্যে হযরত জিবরাঈল আমিনের অবতীর্ণ হওয়ার স্থান। হযরত ফাতেমা উত্তরে বললেন : “ওয়া আলাইকুমুস সালাম,আপনি কে?”
বৃদ্ধ লোকটি বললেন : “আমি একজন বৃদ্ধ আরব,যে কষ্ট ও দুরাবস্থা থেকে (মুক্তি পাবার লক্ষ্যে) হিজরত করেছে এবং মানবকুলের মুক্তিদাতা আপনার পিতার পানে ছুটে এসেছে। এখন হে মুহাম্মদ (সা.)-এর দুহিতা! আমি ক্ষুধার্ত ও বস্ত্রহীন। আমাকে দয়া ও অনুগ্রহ দানে ধন্য করুন। আল্লাহ্ আপনার উপর রহমত বর্ষণ করুন।”
এ সময়ে হযরত ফাতেমা,হযরত আলী ও রাসূল (সা.) তিন দিন যাবৎ কিছু খান নি। নবী করীম (সা.) তাদের অবস্থা ভাল করেই জানতেন। হযরত ফাতেমা দুম্বার চামড়া বিশিষ্ট হাসান ও হুসাইনের বিছানাটি হাতে তুলে নিয়ে বললেন : হে দরজার বাইরে দন্ডায়মান ব্যক্তি! এটা নিয়ে যাও। আশা করি আল্লাহ্ তোমাকে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করবেন।
আরব বৃদ্ধটি বললেন : “হে মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা! আপনার কাছে আমি ক্ষুধা নিবৃত্তির কথা বলেছি আর আপনি আমাকে পশুর চামড়া  দিচ্ছেন। আমি এ চামড়া দিয়ে কি করবো?
হযরত ফাতেমা বৃদ্ধ লোকটির কথা শুনে হযরত হামযার কন্যা ফাতেমার উপহার তার গলার হারটি খুলে বৃদ্ধ লোকটিকে দান করে দিলেন আর বললেন,এটাকে নিয়ে বিক্রি কর। আশা করি আল্লাহ্ তোমাকে এর চেয়ে আরো উত্তম কিছু দান করবেন।
আরব মুহাজির গলার হারটি নিয়ে মসজিদে নববীতে পৌঁছলেন। তখন নবী (সা.) তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে বসে ছিলেন। বৃদ্ধ আরব বললেন : ইয়া রাসূলুল্লাহ্! এই গলার হারটি হযরত ফাতেমা আমাকে দান করেছেন। আর তিনি বলেছেন : “এ গলার হারটি বিক্রি করো। আশা করি আল্লাহ্ তোমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন।”
রাসূলুল্লাহ্ আর চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি বললেন : যে জিনিস সমগ্র নারীকুলের নেত্রী ফাতেমা তোমাকে দিয়েছে কি করে সম্ভব তার দ্বারা আল্লাহ্ তোমার প্রয়োজন মিটাবেন না?
হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির উঠে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন : ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমাকে কি এই গলার হারটি কেনার অনুমতি দেবেন? রাসূল (সা.) জবাবে বললেন : “হে আম্মার! এটা ক্রয় কর। যদি সমস্ত জিন ও ইনসান এটা ক্রয়ের মধ্যে অংশগ্রহণ করে আল্লাহ্ তাদের সকলের উপর থেকে দোজখের আগুন উঠিয়ে নিবেন।” হযরত আম্মার জিজ্ঞেস করেন : হে আরব বৃদ্ধ! এ গলার হারটি কত বিক্রি করবে? বৃদ্ধ লোকটি জবাবে বললেন :
“এ গলার হারের পরিবর্তে আমার জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট যে,আমি যেন তা দিয়ে কিছু রুটি ও মাংস কিনে ক্ষুধা নিবারণ করতে পারি এবং একটা কাপড় কিনে আমার দেহ আবৃত করতে পারি যেন সে কাপড় দিয়ে আল্লাহর দরবারে নামাজে দাঁড়াতে পারি। আর কয়েকটি দিনারই যথেষ্ট যা আমি আমার পরিবারকে দিতে পারি।” হযরত আম্মারের কাছে নবী (সা.) কর্তৃক প্রাপ্ত খায়বরের যুদ্ধের গণিমতের কিছু মাল অবশিষ্ট ছিল। তিনি বলেন : “এ গলার হারের বিনিময়ে আমি তোমাকে বিশ দিনার ও দু’শ দেরহাম,একটি ইয়েমানী পোশাক এবং একটি উট দিবো যার মাধ্যমে তুমি তোমার পরিবারের নিকট পৌঁছতে পার। আর তাতে তোমার ক্ষুধা নিবারণের ব্যবস্থাও হবে।”
বৃদ্ধ লোকটি বললেন : হে পুরুষ! তুমি অত্যন্ত দানশীল। অতঃপর সে লোকটি হযরত আম্মারের সাথে তাঁর গৃহে গেল। হযরত আম্মার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সব কিছু সে লোকটিকে দিলেন। বৃদ্ধ লোকটি মালামাল নিয়ে রাসূল (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন : “এখন তোমার ক্ষুধা মিটেছে? তোমার পরিধেয় বস্ত্র পেয়েছো?”
উত্তরে লোকটি বললেন। “জি,হ্যাঁ! আমার প্রয়োজন মিটেছে।  আমার পিতা-মাতা আপনার জন্যে উৎসর্গ হোক।”
রাসূল (সা.) বললেন : “তাহলে ফাতেমার জন্যে তাঁর অনুগ্রহের কারণে দোয়া কর।”
তখন আরব মুহাজির লোকটি এভাবে দোয়া করলেন : “হে আল্লাহ্! তুমি সর্বদাই আমার প্রভু। তুমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্যের আমি ইবাদত করি না। তুমি সকল ক্ষেত্রে থেকে আমার রিযিকদাতা। হে পরোয়ারদিগার! ফাতেমাকে এমন সব কিছু দাও যা চক্ষু কখনো অবলোকন করে নি আর কোন কর্ণ কখনো শ্রবণ করে নি।”
প্রিয় নবী (সা.) তার দোয়ার শেষে আমিন বললেন এবং তাঁর সাহাবীদের প্রতি তাকিয়ে বলেন : “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এ পৃথিবীতে ফাতেমাকে এই দোয়ার ফল দান  করেছেন।  কেননা  আমি  তাঁর  পিতা,আমার সমকক্ষ পৃথিবীতে অন্য কেউ নেই। আর আলী তাঁর স্বামী। যদি আলী না থাকতো তাহলে কখনো তাঁর সমকক্ষ স্বামী খুঁজে পাওয়া যেত না। আল্লাহ্ ফাতেমাকে হাসান ও হুসাইনকে দান করেছেন। বিশ্বের বুকে মানবকুলের মাঝে তাদের ন্যায় আর কেউ নেই। কেননা তাঁরা বেহেশতের যুবকদের সর্দার।” রাসূল (সা.)-এর সামনে হযরত মেকদাদ,হযরত আম্মার ও হযরত সালমান ফারসী দাঁড়িয়ে ছিলেন।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন : ফাতেমার মর্তবা ও মর্যাদার ব্যাপারে আরো কিছু বলবো?
“বলুন,ইয়া রাসূলুল্লাহ্! ” -তারা উত্তর দিলেন।
তখন রাসূল (সা.) বললেন : “জিবরাঈল আমাকে সংবাদ দিয়েছে যে ফাতেমার দাফন সম্পন্ন হবার পর কবরে প্রশ্নকারী দু’জন ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করবে : তোমার প্রভু কে?
জবাব দিবে : আল্লাহ্। অতঃপর জিজ্ঞেস করবে : তোমার নবী কে?
জবাবে বলবে : আমার পিতা। আরো জিজ্ঞেস করবে,“তোমার যুগের ইমাম ও নেতা কে ছিল?
জবাব দিবে : এই যে আমার কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে আছে,আলী ইবনে আবি তালিব।
নবী করীম (সা.) আরো বলেন,তোমরা জেনে রাখো,আমি তোমাদের নিকট ফাতেমার আরো যোগ্যতা ও মর্যাদার কথা বর্ণনা করতে চাই। “ফাতেমাকে রক্ষা করার জন্যে আল্লাহ্ ফেরেশতাদের একটা বড় দলকে দায়িত্ব দিয়েছেন যেন তারা ফাতেমাকে সামনে-পিছনে,ডানে-বায়ে থেকে হেফাজত করতে পারে এবং তারা তাঁর সারা জীবন তাঁর সাথেই রয়েছেন। আর কবরে এবং কবরে মৃত্যুর পরেও তাঁর সাথে আছেন। তারা তাঁর এবং তাঁর পিতা,স্বামী ও সন্তানদের উপর অসংখ্য দরুদ পাঠ করছেন। অতঃপর যারা আমার ওফাতের পর আমার কবর যিয়ারত করবে তারা যেন আমার জীবদ্দশাতেই আমাকে যিয়ারত করলো। আর যারা ফাতেমার সাক্ষাত লাভ করে তারা আমার জীবদ্দশায়ই আমাকে দেখার  সৌভাগ্য অর্জন করলো। যারা আলী বিন আবি তালিবের সাথে সাক্ষাৎ করলো মনে করতে হবে ফাতেমারই সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। যারা হাসান ও হুসাইনকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করলো তারা আলী বিন আবি তালিবেরই সাক্ষাৎ লাভ করলো। আর যারা হাসান ও হুসাইনের বংশের সন্তানদের সাথে সাক্ষাৎ লাভ করলো তারা ঐ দুই মহান ব্যক্তির সাক্ষাতেই সৌভাগ্যবান হলো।”
পরক্ষণে হযরত আম্মার গলার হারটি নিয়ে মেশক দ্বারা সুগন্ধযুক্ত করলেন এবং ওটাকে ইয়েমেনী কাপড়ে মোড়ালেন। তার একটা দাস ছিল। তার নাম ছিল সাহম। খায়বরের যুদ্ধের গণিমতের মালের যে অংশ তাঁর ভাগে পড়েছিল তা দিয়ে তিনি এই গোলামকে ক্রয় করেছিলেন। তিনি গলার হারটিকে তাঁর এ গোলামের হাতে দিয়ে বললেন : এটা রাসূল (সা.)-কে দিও আর তুমিও এখন থেকে তাঁর হয়ে গেলে।
গোলাম গলার হারটি নিয়ে রাসূল (সা.) খেদমতে পৌঁছে আম্মারের বক্তব্য তাঁর কাছে বলল। হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) বললেন : তুমি ফাতেমার কাছে চলে যাও। তাকে গলার হারটি দিয়ে দাও আর তুমিও এখন থেকে তাঁর হয়ে কাজ করবে। লোকটি হযরত ফাতেমার কাছে গলার হারটি নিয়ে গেল এবং নবী (সা.)-এর কথা তাঁর কাছে পৌঁছালো। হযরত ফাতেমা গলার হারটি গ্রহণ করলেন আর দাসটিকে মুক্ত করে দিলেন। দাসটি হাসি ধরে রাখতে পারলো না। হযরত ফাতেমা প্রশ্ন করলেন : “তোমার হাসির কারণ কি?”
সদ্য মুক্ত দাসটি বলল : “এই গলার হারের অভাবনীয় বরকত  আমার মুখে হাসি ফোটাতে বাধ্য করেছে। যা ক্ষুধার্তকে অন্ন দিয়ে পেট ভর্তি করেছে,বস্ত্রহীন ব্যক্তিকে বস্ত্র পরিধান করিয়েছে এবং অভাবীর অভাব পূরণ করেছে আর একজন দাসকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছে। অবশেষে গলার হার আবার তার মালিকের কাছে ফিরে এসেছে।”৩৫

তথ্যসূত্রঃ
১। আমালী,সাদুক,পৃ. ৬৮৮,মজলিস ৮৬,হাদীস নং-১৮। ইলালুশ শারায়ী,পৃ. ১৭৮। বিহারুল  আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১০,২য় অধ্যায়,হাদীস নং- ১।
২। কাশফুল গুম্মাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ১৮।  মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৩২। বিহারুল আনওয়ার (নুতন মুদ্রণ),৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১৬। বাইতুল আহযান,মুহাদ্দীসে কোমী,(সাইয়্যেদুশ শুহাদা প্রকাশনা,কোম থেকে মুদ্রিত),পৃ. ১২।
৩। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৩৩। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১৬। বাইতুল আহযান,পৃ. ১০-১৮।
৪। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৩২। উসুলে কাফি,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৫৮ (ইসলামিয়া প্রেস,তেহরান)।
৫। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১০।
৬। বাইতুল আহযান,মুহাদ্দীসে কোম্মী,পৃ. ১৩৭। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬৩। কানযুল ফাওয়ায়েদ,কারাচেকী,পৃ. ৩৬০।
৭। বাইতুল আহযান,পৃ. ১৪১। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬৪। আমালী,সাদুক,পৃ. ১২১। কাশফুল  গুম্মাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ৬০।
৮। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১৭৭,১৭৮। বাইতুল আহযান,পৃ. ১৩৮।
৯। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১৫৭। বাইতুল আহযান,পৃ. ১৪০,১৪১।
১০। এ গ্রন্থ সংক্ষিপ্ত হওযার কারণে ঐ সব ঘটনাবলী বর্ণনা থেকে বিরত থেকেছি যা রাসূল (সা.) ওফাতের পর সংঘটিত হয়েছিল। দৃষ্টান্তস্বরূপ : হযরত ফাতেমার গৃহে অগ্নি সংযোগ,এ মহিয়সী রমণীর মসজিদে নববীতে গমন এবং সেখানে জনগণের চিন্তা-চেতনা পরিশুদ্ধতার লক্ষ্যে বক্তৃতা করা আর বেলায়েতের সীমানা রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা। তদ্রুপ ফাদাক বাগানের ঘটনা এবং তা নিয়ে প্রথম খলিফার সাথে বাক-বিতণ্ডা,অসিয়ত ও শাহাদাতের বিবরণী এবং তাঁর শাহাদাতের পর অনুষ্ঠান ইত্যাদি। পাঠক মহোদয়গণ ঐ সমস্ত হৃদয় বিদারক অথচ গঠনমুলক ও তথ্য উম্মোচক ঘটনাবলীর বিস্তারিত বিবরণ সম্বন্ধে অন্যান্য গ্রন্থ যেমন মুহাদ্দীসে কোম্মী রচিত ‘বাইতুল আহযান’ গ্রন্থ পাঠে অবহিত হতে পারেন।
১১। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৩৭। উসুলে কাফি,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৫৮।
১২.প্রাগুক্ত,হাদীস নং ৩৭২৫
১৩.বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ মুসলিম,৭ম খণ্ড,হাদীস নং ৬০৮০
১৪.তাফসীরে জালালাইন,১ম খণ্ড,পৃ.৬০; বায়যাভী,১ম খণ্ড,পৃ. ১১৮,তাফসীরে দুররুল মানসুর,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৯,মিশর মুদ্রণ
২৫.তাফসীরে জামাখশারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৫২; তাফসীরে ফখরে রাযী,৮ম খণ্ড,পৃ. ২৭৬; তাফসীরে দুররে মানসূর,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ২৯৯; যাখায়েরুল উকবা,পৃ. ৮৯;
১৬.যাখায়েরুল উকবা,পৃ. ৪৪
১৭.মিজানুল ইতিদাল,২য় খণ্ড,পৃ. ১৩১; কানজুল উম্মাল,২য় খণ্ড,পৃ. ২১৯
১৮.বুখারী,কিতাবুল বাদাউল খালক
১৯.কাশফুল গুম্মাহ,২য় খণ্ড,পৃ. ২৪; মানাকিবে শাহরাশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১০৬; উয়ূন আখবারির রিযা (আ.),২য় খণ্ড,পৃ. ২৬
২০.সূরা আহযাব : ৫৭
২১.সূরা তাওবা : ৬১
২২। আদ দোহা : ৫।
২৩। রাওদ্বাহ্ আল কাফি,পৃ. ১৬৫,ইসলামিয়া প্রেস,তেহরান থেকে প্রকাশিত।
২৪। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৪২,৮২; বাইতুল আহযান,পৃ. ২৩।
২৫। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ১৩৪। কাশফুল গুম্মাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৯২। বাইতুল আহযান,পৃ. ৩৭।
২৬। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৮৪। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১১৯। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬১। বাইতুল আহযান,পৃ. ২২।
২৭। কাশফুল গুম্মাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ২৫,২৬। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৮১,৮২। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬১। বাইতুল আহযান,পৃ. ২২।
২৮। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৯১। রিয়াহিনুশ শারিয়াহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ২১৬।  মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬১,১৬২।
২৯। কাশফুল গুম্মাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ২৩,২৪। মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১১৯। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬১।
৩০। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৯২। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ১৬২।
৩১। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ২৮।  বাইতুল আহযান,পৃ. ২০।
৩২। হিজর : ৪৩,৪৪।
৩৩। কিসাস : ৬০ এবং আশ শুরা : ৩৬।
৩৪। রায়াহিনুশ শারিয়াহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ১৪৮। বাইতুল আহযান,পৃ. ২৮,২৯।
৩৫। বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৫৬-৫৮।

Comments

  1. অনন্য-অতুলনীয় বরকতময় মা-ফাতিমা সালামুল্লাহ আলাইহার এ দান ও তাঁর হারের মর্যাদা!!

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

হযরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ফজিলত ও মর্যাদা

মহানবী সা. ই হচ্ছেন একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ ও মানদন্ড।